মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় পুলিশের সামনেই আনোয়ার হোসেন (৩৫) নামের এক যুবককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠেছে। শুধু তাই নয়, আহত ওই যুবককে হাসপাতালে নিতেও বাধা দেওয়া হয়। গত রোববার (১২ নভেম্বর) রাতে উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের ফোর্ডনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত আনোয়ার হোসেন ওই গ্রামের ফজল হকের ছেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ফোর্ডনগর গ্রামের আবু বক্কর খান জানান, তার ভাইদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে একটি দোকান নিয়ে বিরোধ চলছে। এর জের ধরে রোববার সন্ধ্যায় তাকে মারধর করে ভাই জজ খান ও তার ছেলে সানোয়ারসহ ৪/৫ জন। তাৎক্ষনিক স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে ঘটনা জানালে ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করে ফেরার সময় একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের সাথে দেখা হয়। আনোয়ারের মোটরসাইকেলে করে আবার পুলিশ ক্যাম্পে ফিরেন আবু বক্কর। এরপর তার সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান এসআই রফিকুল ইসলামসহ তিন পুলিশ সদস্য।

আবু বক্কর জানান, পুলিশের সামনেই তার ভাই ও ভাবি তাকে গালাগালি করাসহ কলার ধরে মারার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর সেখানে উপস্থিত হন আরো ৭/৮ জন পুলিশ সদস্য। এসময় অদূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন আনোয়ার হোসেন। পুলিশের সামনেই হাতে ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড নিয়ে আনোয়ারকে তাড়া করে ভাই জজ খান তার ছেলে সানোয়ার, মাসুদ, শামীম ও আরেক ভাইয়ের ছেলে ইমরান, রবিন, রায়হান ও নাজির। তারা তাকে ধরে ধারালো অস্ত্রদিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করলেও আনোয়ারকে রক্ষায় পুলিশ এগিয়ে যায়নি। পরে  গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আনোয়ার হোসেনের বাবা ফজল হক জানান, তার ছেলের কপালে বেশ কযেকটি সেলাই পড়েছে। শরীরের বিভিন্নস্থানে মারাত্মক জখম হয়েছে। তিনি আরও বলেন, একজন মানুষকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি নিয়ে আসার অপরাধে ছেলেকে নির্মমভাবে কোপানো ও পোটানো হয়েছে। অথচ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখেছে পুলিশ। তিনি এঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।

ধল্লা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম জানান, আবু বক্কর খানের সাথে তার ভাইদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এর জের ধরে রোববার তাকে মারধর করা হয় বলে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।এর সূত্র ধরেই তিনি ঘটনাস্থলে যান। এ সময় উভয়ের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়।  জজ খানসহ তার ছেলেরা আনোয়ারকে ধর বলে ধাওয়া করে ঠিকই কিন্তু তাকে কোপানো হয়নি। শুনেছি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে আহত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় তিনি শুধু একা ছিলেন না এসময় ওয়ারেন্ট তামিল করতে যাওয়া থানার ৪ জন এসআই, ৩ জন এএসআইসহ ৪/৫ জন কনস্টেবল উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলাম জানান, ঘটনাটি তার জানা নেই। থানায় কত অভিযোগই তো হয়। সব অভিযোগের বিষয়ে তো আর তাৎক্ষনিক জানা সম্ভব হয় না। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো ও মারপিটের বিষয়ে অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ ঘটনায় গতকাল সোমবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আহত আনোয়ারের বাবা ফজল হক বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছেন।