ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের সাথে তামাশা করছে সরকার। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মূল হোতা ক্ষমতাসীনদের নেতা ও এমপিরা। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পাঁচুরিয়া গ্রামে বিএনপির প্রাক্তন মহাসচিব মরহুম খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১১ম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার কবর জিয়ারত ও দোয়া অনুষ্ঠান শেষে এসব কথা বলেন।

এসময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে ১/১১র চেয়েও কঠিন সময় যাচ্ছে। ৩৫ লক্ষ মিথ্যা মামলা আর সহস্রাধীক নেতা কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। বিএনপিকে উৎখাতে বর্তমান সরকার সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে। এই ষড়যন্ত্র সেই এরশাদের আমল থেকেই। কিন্তু এদেশের মানুষের ভালবাসা আর গণতন্ত্রের আস্থায় অবিচল থেকে বিএনপি এখনো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। গনতন্ত্রের মানুষকন্যা দেশ নেত্রী খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দীদের মুক্তি এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছে। বর্তমানে দল পুনর্গঠনের কাজ চলছে। এদেশের জনগনকে সাথে নিয়ে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করা হবে।

খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি ফাউন্ডেশনের আয়োজনে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান, কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইছাক সরকার, জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট নূরতাজ আলম বাহার, খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পুত্র জেলা বিএনপির সহ সভাপতি খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু, কেন্দ্রিয় নির্বাহী সদস্য খোন্দকার আব্দুল হামিদ খান ডাবলু, আমেরিকাস্থ মানিকগঞ্জ কল্যান সমিতির সভাপতি খোন্দকার আফতাব হোসেন জগলু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার গোলাম মহিয়ার খান শিপার, জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাড. জামিলুর রশিদ খান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের সভাপতি এডভোকেট আজাদ হোসেন, জেলা বিএনপির ত্রাণ ও পূর্নবাসন সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল আলিম খান মনোয়ার, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, প্রজন্ম ৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ঢালী আমিনুর ইসলাম রিপন প্রমুখ। এর আগে প্রথমে তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কবর জিয়রত ও পুস্পস্তবক অর্পন করেন। পরে মরহুমের আতœার মাগফিরাতে কামনা করে দোয়া করেন।
এসময় স্থানীয় সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন, মরহুম খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ছিলেন একজন দৃঢ়চেতা ও আদর্শনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ। দৃঢ়তা, অটুট মনোবল এবং ব্যক্তিত্বে তিনি ছিলেন অনন্য উচ্চতায় একজন ব্যতিক্রমী রাজনীতিবিদ। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও জনগণের মুক্তির সকল সংগ্রামে তিনি রেখেছেন অসামান্য অবদান। ১/১১-তে দেশের এক চরম রাজনৈতিক সংকটকালে বিএনপি মহাসচিবের দায়িত্ব¡ কাঁধে নিয়ে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন দলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত রুখে দিতে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, আজ ১৬ মার্চ বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, ভাষা সৈনিক, জাতীয় নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ১১ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১১ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর খোন্দকার দেলোয়ার বিএনপির মহাসচিব নিযুক্ত হন। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুরো সময় বিএনপির নানা সঙ্কটে খালেদা জিয়ার পক্ষে তিনি জোরালো ভূমিকা পালন করেন। তৎকালীন সরকার জোর করে বিএনপির নেতৃত্ব বদল করতে চাইলেও শুধুমাত্র খোন্দকার দেলোয়ারের জোরালো ভূমিকায় সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। দেলোয়ারই সে যাত্রায় বিএনপিকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করেছেন।