নিজস্ব প্রতিবিদক, মানিকগঞ্জ ঃ ০৯ জুলাই ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে ডেঙ্গু অনেক বেড়ে যাচ্ছে। ইতি মধ্যে দেশে ডেঙ্গুতে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১২ হাজার আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং ৯ হাজারের বেশি লোক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান হচ্ছে দেশের ৫৭ টি জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পরেছে। রোববার দুপুরে মন্ত্রী মানিকগঞ্জের গড়পাড়ায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, মশা বেশি থাকার কারণে এবছর ডেঙ্গু বাড়তি। বৃষ্টি এবং বিভিন্ন জায়গায় পানি আটকে থাকায় মশা বেশি জন্ম নিচ্ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের একমাত্র পথ হচ্ছে মশা কমানো। মশা কম হলে মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত কম হবে। আশঙ্কাজনক বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো জেলার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। তার মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। সারা দেশের ডেঙ্গু আক্রান্তের ৬০ ভাগই ঢাকায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতাল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনেক রোগী আছে। ডেঙ্গু মোকাবেলায় আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভাকে আহবান করব তারা যেন বেশি বেশি স্প্রে করে এবং যেখানে যেখানে পানি জমে সেগুলো সরিয়ে ফেলে।
মন্ত্রী আরো বলেন যেখানে বহুতল ভবন আছে সেখানে ডেঙ্গু বেশি দেখা দিচ্ছে। কারণ সেসব ভবনের নিচে গ্যারেজ আছে এবং পানি জমে থাকে। নির্মানাধীন ভবনগুলোতে বেশি পানি জন্মে থাকায় সেখানেও এডিস মশা জন্ম নেয়। সরকার একা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না পাশাপাশি জনগণকেউ এগিয়ে আসতে হবে। যার যার বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার করতে হবে ,যেখানে মশা জন্ম নেয় সেখানে স্প্রে করে লার্ভা গুলোকে ধ্বংস করতে হবে।আমাদের ডিপার্টমেন্টে যারা মশা নিয়ে গবেষণা করেন তারা জানিয়ে দিয়েছেন কোথায় কোথায় মশা ভেসে আছে এবং ঘনত্ব বেশি আছে। এখন বাকি কাজটুকু সিটি কর্পোরেশনের। সিটি কর্পোরেশন স্প্রে করেছে কিন্তু আমার কাছে মনে হয় তারা সেভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। যার ফলে ডেঙ্গু এত বেড়েছে। আমাদের মেয়রগন বিভিন্ন ভবনে যাচ্ছেন তদারকি করছেন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কিন্তু সেভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে নাই। তাদের একার পক্ষে সম্ভব নয় জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে ডেঙ্গু মোকাবেলায়।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালগুলোর ব্যবস্থা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, দেশের সমস্ত হাসপাতালে ডেঙ্গু ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে এবং ডাক্তার নার্সদের প্রশিক্ষণ দেয়া আছে। এছাড়া ওষুধ পত্রের সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতালগুলোতে এখনো সিট খালি আছে। আশা করি চিকিৎসার কোন সমস্যা হবে না।
মন্ত্রী আরো বলেন,দেশে আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু আরো বাড়তে পারে। সেজন্য এখন থেকেই সবাইকে সজাগ এবং সচেতন হতে হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল,সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফছার সরকার,জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবুল সরকারসহ আরো অনেকে।