মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ ২৭ জানুয়ারি
মানিকগঞ্জ শহরের দক্ষিন সেওতা এলাকায় গৃহবধু মাহমুদা বেগম (৪৫) কে হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছেন পুলিশ।
প্রেমিকের সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মা মাহমুদা বেগমকে পরিকল্পিত ভাবে প্রেমিককে দিয়ে হত্যা করে মেয়ে জ্যোতি আক্তার। হত্যাকান্ডের সহযোগী ছিল প্রেমিক ও তার তিন বন্ধু। মানিকগঞ্জের দক্ষিন সেওতা গ্রামে গত বুধবার ঘরে ঢুকে গৃহবধু মাহমুদা বেগম হত্যা মামলায় আটক জ্যোতি আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে এ কথা জানায়। সোমবার বিকেলে আসামী প্রেমিক নাঈম ও তার বন্ধু রাকিব মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সিনিয়র বিচারক শাকিল আহম্মেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপুলিশ পরির্দশক (এস,আই )শামিম আল মামুন জানান, গত নভেম্বরে জ্যোতির স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এর মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রণয় গড়ে উঠে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের আরাকুল গ্রামের নাঈমের সাথে। নিজেরা বিয়ের জন্য প্রস্তুতিও নেয়। কিন্তু জ্যোতির মা মাহমুদা বেগম এতে রাজি ছিলেন না। তিনি মেয়েকে অনত্র্য বিয়ে দেয়ার জন্য চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পাশাপাশি মেয়েকে শাসনও করতেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিক নাঈমের সাথে জোট করে জ্যোতি মাকেই হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার আগের দিন ২১ জানুয়ারি রাতেই প্রেমিক নাঈম, রাকিব সহ আরও দুই বন্ধু অবস্থান নেয় জ্যোতির শোবার ঘরে। বন্ধুদের ভাড়া করা হয় দেড় লাখ টাকায়। এর মধ্যে জ্যোতি তার স্বর্ণালংকার এবং নগদ ১৬ হাজার টাকা দিয়ে প্রাথমিক ভাবে কিছু শোধ করে হত্যাকারীদের। রাতেই হত্যা কান্ড ঘটনার পরিকল্পনা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। ২২ জানুয়ারি বুধবার সকালে জ্যোতির বাবা জহিরুল ইসলাম আলিয়ার প্রাতঃভ্রমনে বাড়ির বাইরে যায় আর মা মাহমুদা বেগম সেলাই মেশিনে কাজ করার জন্য বসেন। এই সুযোগে মাহমুদা বেগমের রুমে ঢুকে নাঈমসহ আরো দুইজন। এরা রুমে ঢুকেই মাহমুদা বেগমকে গলা টিপে হত্যা করে।

হত্যাকান্ডকে ডাকাতি সাজিয়ে ওই সময় বক্তব্য দেন জ্যোতি আক্তার। কিন্ত তার কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়াতে ঘটনার দিনই জ্যোতিকে আটক করাা হয়। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে আটক করা হয় নাঈম ও রাকিবকে। অন্য দুজনকে গ্রেফতারের চেস্টা চলছে। কোর্টে হাজির করার পর জ্যোতিকে চারদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। আদালতে জ্যোতি আক্তার রোববার দিন ও অপর দুই আসামী রাকিব ও নাঈম সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারা দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

বিপ্লব চক্রবর্তী