১৫ ওভার শেষে রাজশাহী রয়্যালসের রান ৮৯। বাকি ৫ ওভারে তাদের দরকার ছিল ৭৬ রান। অর্থাৎ ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫ ওভারে যে রান নেওয়া হয়েছে প্রায় তার কাছাকাছি রান নিতে হবে এক-তৃতীয়াংশ বলে। কাজটা কঠিন হলেও রাজশাহী আশা ছাড়েনি। উইকেটে যে একজন আন্দ্রে রাসেল ছিলেন। রাসেল ঝড়ই প্রায় অবিশ্বাস্য মনে হওয়া জয় এনে দিল রাজশাহীকে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ২ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলের ফাইনালে চলে গেল রাজশাহী। আগামী শুক্রবারের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্স।

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে আজ দুবার ঝড় উঠেছিল। প্রথম ঝড়টা ম্যাচের শুরুতে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স তাদের সব ঝড় তোলার ক্ষমতা ইনিংসের শুরুতেই ব্যবহার করে ফেলেছিল। আর রাজশাহী তাদের ক্ষমতা দেখিয়েছে শেষ ৫ ওভারে। শেষ পর্যন্ত কোনটা বেশি কার্যকর হয়েছে সেটা তো ম্যাচের ফলই বলে দিচ্ছে।

শেষ ৫ ওভারে ৭৬ রানের সমীকরণে দাঁড়িয়ে রাসেল সর্বোচ্চই করেছেন। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৭ রান দেওয়া রুবেল হোসেনের বলে তিন ছক্কায় নেওয়া হলো ১৯। এর মাঝে দুই ছক্কা রাসেলের। অন্যটি মোহাম্মদ নওয়াজের। রায়াদ এমরিতের পরের ওভারে এল ২০ রান। সঙ্গে দুই উইকেটও হারিয়েছে রাজশাহী। নওয়াজ ও ফরহাদ রেজা দুজনই অবশ্য আউট হওয়ার আগে একটা করে ছক্কা মেরেছেন। শেষ বলে রাসেলও মেরেছেন এক ছক্কা।

শেষ ৩ ওভারে ৩৭ রান দরকার ছিল। রুবেলের বলে বারবার চেষ্টা করেও ব্যাটে বল ছোঁয়াতে পারেননি রাসেল। রুবেলের শেষ বলে ছক্কা মেরে সমীকরণটা ১২ বলে ৩১ রানে নামিয়ে আনেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অলরাউন্ডার। মেহেদী হাসান পরের ওভারে নিজের অনভিজ্ঞতা টের পাইয়ে দিয়েছেন। টানা তিন বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ১৬ রান তুলেছেন রাসেল। এমনকি আবু জায়েদও এক চার মেরে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে দিয়েছেন। ২৩ রানের এক ওভারে রাজশাহী এগিয়ে গেল বহু দূর।

শেষ ওভারে ৮ রান দরকার ছিল তাদের। প্রথমবারের মতো বল তুলে দেওয়া হলো আসেলা গুনারত্নেকে। প্রথম দুটি বলে কোনো রান আসেনি। পরের বলে ওয়াইড। চার বলে ৭ দরকার ছিল। গুনারত্নের নো বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করে দিলেন রাসেল। ওই ছক্কাতেই ২২তম বলে ফিফটিও হয়ে গেল রাসেলের। বিপিএলে এবারের নিজের প্রথম ফিফটিটা সঠিক সময়ের জন্যই জমিয়ে রেখেছিলেন রাসেল। ৫৪ রানের পথে দুটি চার মেরেছেন আর সে সঙ্গে বিশাল ৭টি ছক্কা।

এর আগে ক্রিস গেইলের ২৪ বলে ৬০ রানের ঝড় দেখেছে দর্শক। ৬ চার ও ৫ ছক্কার সে ইনিংসের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর ১৮ বলে ৩৩ রান চট্টগ্রামকে মাত্র ৯.৪ ওভারে ১০০ রান এনে দিয়েছিল। কিন্তু ১১ রানের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ, নুরুল ও চ্যাডউইক ওয়ালটনের বিদায়ে পথ হারানো চট্টগ্রাম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ১৬৪ রান তুলতে পেরেছে শুধু।