আব্দুর রাজ্জাকঘিওর, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জের ঘিওরে চাঞ্চল্যকর নববধূর গলা কেটে হত্যা মামলার ঘাতক স্বামী মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রূপক ধরা পরেছে সিআইডির হাতে। সিআইডির এলআইসি শাখার একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে রূপককে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন।বিষয়টি নিশ্চিত করে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, স্ত্রী হত্যা মামলার আসামি রুপককে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি আনুষ্ঠানিক জানানো হয়েছে।
এসময় রূপকের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াাজুরী ইউনিয়নের কাকজোর গ্রামের সুমি আক্তার (২২) কে বিয়ে করেন পাশ্ববর্তী শোলধারা গ্রামের মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রূপক (২৮)। প্রায় আড়াই মাস আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে গত ১৫ মে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কথা ছিল সুমি বিয়ের পরও চাকরি করবে। সুমির চাকরি ছাড়ার বিষয় নিয়ে দফায় দফায় ঝামেলা তৈরি হয় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে। এ ঘটনার জের ধরে গত ২১ জুলাই রূপকের সঙ্গে সুমির কথা কাটাকাটি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে রূপক সুমি আক্তারকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকলে রূপকের মা রওশন আরা বেগম রূপককে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু রূপক আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে সুমির গলায় কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করলে সুমি আক্তার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সুমির মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায় রূপক।
ঘটনার পরদিন নিহত সুমির বাবা রহম আলী (৬০) রুপককে একমাত্র অভিযুক্ত করে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডি। সর্বশেষ গতকাল ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে রূপককে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
জানা যায়, মানিকগঞ্জ জজ কোর্টে অ্যাডভোকেটের সহকারী হিসেবে সে প্রায় ৯ বছর ধরে কাজ করতো। প্রায় আড়াই মাস আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে গত ১৫ মে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে থেকেই ভিকটিম সুমি আক্তার এসডিআই নামীয় একটি বেসরকারি সংস্থায় বানিয়াজুড়ি ইউনিয়নে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করতো। বিয়ের সময় কথা ছিল সুমি আক্তার বিয়ের পরও চাকরি করবে। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর পরিবারের সদস্যদের মত পাল্টে যায়। তারা সুমি আক্তারকে চাকরি ছাড়ার জন্য চাপ দিতে থাকে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, বিয়ের মাত্র আড়াই মাসের মাথায় সুমি আক্তারের চাকরি নিয়ে সৃষ্ট দাম্পত্য কলহের জেরে নববধূকে অত্যন্ত নির্মমভাবে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় একমাত্র এজাহারনামীয় আসামিকে দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার বাংলাদেশ পুলিশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।