মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ ১৯ ডিসেম্বর
বোনের হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করলেন রাজু আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে বোনের শ^শুড়বাড়ির লোকজনের পাশাপাশি পুলিশ ও ডাক্তারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়।
রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঘিওর উপজেলার তাড়াইল গ্রামের রাজু আহমেদ। লিখিত বক্তব্যে রাজু আহমেদ বলেন, তার বোন যুথি আক্তার মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে এম কম পাশ করেন। এরপর মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে ইজ্জত আলীর ছেলে সুমন বিশ^াসকে ২০১৪ সালে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে সুমন বিশ^াসের পরিবার যৌতুকের জন্য যুথিকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দসহ মারধর করেন। বোনের সুখের কথা চিন্তা করে যৌতুক হিসেবে স্বর্নালংকার ও আসবাবপত্র দেওয়ার পাশাপাশি প্রতি মাসে খরচ হিসেবে টাকা পাঠানো হতো।
এদিকে বোনের ভাশুর মাসুদ বিশ^াস পীরের ব্যাবসার আড়ালে অসামাজিক অপকর্ম করেন। বিষয়টি তার বোন যুথি দেখে ফেলায় মাসুদ বিশ^াস তার বোনকে হুমকি দিয়ে বলেন, এই ঘটনা কাউকে বলে দিলে তোমাকে (যুথি) মেরে ফেলা হবে।
চলতি বছর ১৮ জুলাই যুথি বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে ঘিওর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক আল মামুন তাকে মোবাইল ফোনে জানান। ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে বলা হয়েছিলো আমি না আসা পর্যন্ত যুথির পোষ্টমের্টেম না করার জন্য। কিন্তু পুলিশ দ্রুত পোষ্টমর্টেম করে দাফনের ব্যবস্থা করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, তার বোন একজন শিক্ষিত মেয়ে সে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে রেখেছে সুমন। এব্যাপারে ঘিওর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।
রাজু আহমেদ পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট নিয়েও প্রশ্ন তুলেন। তিনি অভিযোগ করেন হরিরামপুর থানায় বিষপানে সুমি আক্তার নামে একজন আত্মহত্যা করে। কিন্ত সুমি আক্তাররে রিপোর্ট তার বোনে বলে চালিয়ে দিয়েছেন ডাক্তার।
পরবর্তীতে এক মাস পর আদালতে মামলা করার পর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান ঘিওর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক আল মামুন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের বাঁচাতে মনগড়া একটি মিথ্যা চুরান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। সংবাদ সম্মেলনে যুথির মা রওশন আরা বেগম, বোন পারভীন আক্তার, ভাবী রোজি আফরোজ সহ সবাই কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, যুথি আক্তার একজন মেথাবী, সে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে রেখেছে। আদালতে পুনঃতদন্তর জন্য আবেদন করা হবে। আশা করি পুনঃতদন্তে যুথির হত্যার কারণ বের হবে।
অপর দিকে যুথির স্বামী সুমন বিশ^াস জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়ি ছিলেন না। বানিয়াজুরী এলাকায় একটি ইটখোলার ঘরে তার স্ত্রী বিষপ্রানে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে সুমন দাবি করেন তার স্ত্রী মানসিক ভাবে সুস্থ্য ছিলেন না।
বিপ্লব চক্রবর্তী