জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় উদয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের দুই পরিচালক গ্রাহকের সঞ্চয় আমানতের প্রায় ১০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সমিতিটির গ্রাহকসংখ্যা আড়াই হাজার। ওই দুই পরিচালক হলেন মো. আইনুল হক ও  মো. দৌলত হোসেন।

এ নিয়ে গ্রাহকসহ এলাকার মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাহকরা তাঁদের আমানতের টাকা ফেরতের দাবিতে গতকাল সোমবার দুপুরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। পরে তাঁরা মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর স্মারকলিপি দেন।

জানা গেছে, মাদারগঞ্জের গুনারিতলা ইউনিয়নের গুনারিতলা গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা মো. আইনুল হক ও একই এলাকার জাফর আলীর ছেলে মো. দৌলত হোসেন ২০০৫ সালে উপজেলার গুনারিতলা বাজারে উদয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি চালু করেন, যার নিবন্ধন নম্বর ১২৬।

লোভনীয় হারে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে সঞ্চয়, সঞ্চয়ী পেনশন স্কিম ও মেয়াদি আমানত খাতে গ্রাহক সংগ্রহ শুরু করেন তাঁরা। গুনারিতলা ইউপিসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শ্রমজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বড় ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আড়াই হাজার গ্রাহক করেন তাঁরা।

বর্তমানে ওই সমিতির প্রায় ১০ কোটি টাকার সঞ্চয় আমানত গচ্ছিত আছে। মাস দেড়েক আগে সমিতির কার্যক্রম গুটিয়ে ওই দুই পরিচালকসহ তাঁদের পাঁচজন কর্মচারী উধাও হয়ে যাওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে সন্দেহ দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে গ্রাহকরা গতকাল তাঁদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত পেতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। এ সময় গ্রাহকরা তাঁদের সঞ্চয়ী আমানতের পাস বই প্রদর্শন করেন।

ছয় লাখ টাকার মেয়াদি আমানত সঞ্চয়কারী স্থানীয় চরনাদাগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে গুনারিতলা বাজারে সমিতির কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখি। এর পর থেকে সমিতির দুই পরিচালক আইনুল হক ও দৌলত হোসেনসহ সমিতির পাঁচজন কর্মচারী এলাকা থেকে উধাও হয়ে যান। গ্রাহকদের অনেকে প্রতিদিন সমিতি কার্যালয়ে গিয়ে পরিচালকদ্বয়কে না পেয়ে ফেরত আসছেন। সমিতির সব গ্রাহক যাতে তাঁদের কষ্টে জমানো আমানতের টাকা ফেরত পান সে জন্য আমরা জেলা প্রশাসক ও মাদারগঞ্জের ইউএনওর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। টাকা ফেরত এবং সমিতির ওই দুই পরিচালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’