পরিকল্পিত মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ইরানের এলিট ফোর্স আল কুদসের জেনারেল কাসেম সোলেইমানির জানাজায় অংশ নিতে এসে পদদলিত হয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন ৪০ ব্যক্তি।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সোলেইমানির জানাজায় প্রচুর জনসমাগম ঘটে যেখানে ভিড়ের মধ্যে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৪০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ২১৩ জন। তবে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় কর্মকর্তাদের।
মঙ্গলবার সোলেইমানির দাফন সম্পন্ন হয়েছে তার নিজ জন্মভূমি কেরমান শহরে। তার জানাজা ও দাফনে অংশ নিতে এদিন সকাল থেকেই সেখানে লোক সমাগম ঘটতে শুরু করে। এক পর্যায়ে কিরমানের সড়কগুলো জনাকীর্ণ হয়ে ওঠে। কেবল কিরমান নয়, ইরানের অন্যান্য এলাকা থেকেও সোলেইমানির ভক্তরা ছুটে আসেন।
অতিরিক্ত ভিড়ের চাপে এক পর্যায়ে পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে কীভাবে এ ঘটনা ঘটে তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।
এর আগে গত সোমবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত তার প্রথম জানাজাতেও প্রচুর লোক হয়েছিলো। কারো কারো মতে, ওই জানাজায় ৭০ লাখের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিলো।
জানাজা শেষে বিকেলে জেনারেল সোলাইমানিসহ মার্কিন বিমান হামলায় নিহত পাঁচ কমান্ডারদের লাশ তেহরানের দক্ষিণে অবস্থিত কোম নগরীতে নেয়া হয়। সেখানকার জানাজাতেও লাখ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
এদিন সকালেই ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরমান শহরে পৌঁছে সোলেইমানির কফিন। জেনারেল সোলাইমানির ইচ্ছানুযায়ী তার জন্মস্থানেই তাকে সমাহিত করা হয়। এখানে তার শেষ জানাযা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর তার লাশ দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
জানাজার মতো তার দাফনেও প্রচুর লোক সমাগম হয়। প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রচুর লোক জমা হতে শুরু করে কিরমানের সড়কগুলোতে। তাদের অনেকের হাতেই শোভা পাচ্ছিলো সোলেইমানির ছবি সম্বলিত পোস্টার। তারা ‘আমেরিকা নিপাত যাক’‘ইসরাইল নিপাত যাক’,‘আমার ভাইকে যারা মেরেছে তাদেরকে হত্যা করব’ইত্যাদি স্লোগানে প্রকম্পিত করে গোটা শহর।
ইরানের অন্যান্য শহর থেকেও লোকজন তার দাফন কাজে শরিক হতে ছুটে আসছেন। কেননা গোটা ইরান জুড়ে ছড়িছে রয়েছে তার অগণিত ভক্ত ও সমর্থক। শুধু ইরানই নয়; ইরাক, সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের লোকজনের কাছেও সমান জনপ্রিয় ছিলেন কাসেম সোলেইমানি। তাই তার মৃত্যুতে শোকে ভাসছে গোটা মধ্যপ্রাচ্য।
গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ইরাকের রাজধানী বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় নিহত হন সোলেইমানিসহ মোট আটজন সারিক কর্মকর্তা। নিহতদের মধ্যে ইরানেরই পাঁচজন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ভয়াবহ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় পরষ্পরের বিরুদ্ধে ননা রকম হুঙ্কার দিচ্ছেন দু দেশের কর্মকর্তারা।