টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ বৃহস্পতিবার (০৬ মে) থেকে রাজধানীসহ দেশের সব জেলায় বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। গণপরিবহন চলাচলের বিষয়ে বুধবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিআরটিএর নির্দেশনাগুলো হলো—
১. আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।
২. কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে উল্লিখিত মোট আসন সংখ্যার অর্ধেকের (৫০%) বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না।
৩. কোনোভাবেই সমন্বয়কৃত ভাড়ার (বিদ্যমান ভাড়ার ৬০% বৃদ্ধি) অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না।
৪. ট্রিপের শুরু ও শেষে জীবাণুনাশক দিয়ে গাড়ি জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৫. পরিবহন সংশ্লিষ্ট মোটরযান চালক, অন্যান্য শ্রমিক কর্মচারী ও যাত্রীদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে পরিবহনের মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে—
মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রী গাড়িতে ওঠাতে পারবে না এবং গাড়ির স্টাফদের মালিক মাস্ক সরবরাহ করবেন; গাড়িতে সিটের অর্ধেক যাত্রী বহন করতে হবে; লকডাউনে মালিক-শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এ ক্ষেত্রে রুট মালিক সমিতি/পরিবহন কোম্পানির জিপির নামে কোনো ধরনের অর্থ গাড়ি থেকে আদায় করতে পারবে না।
বুধবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মানুষের চলাচলে বিধি-নিষেধ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার অভ্যন্তরে বাস চলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বন্ধ থাকবে দূরপাল্লার বাস এবং লঞ্চ-ট্রেন চলাচল।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ২১ মার্চ থেকে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার। দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গেল বছরের ১ জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্ত সাপেক্ষে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। তখন ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়।
দীর্ঘদিন চলার পর করোনা সংক্রমণ একটু কমে এলে গত সেপ্টেম্বর মাসে শতভাগ আসনে যাত্রী নিয়ে চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। তখন থেকে মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) পর্যন্ত শতভাগ আসনেই যাত্রী নিয়ে চলছিল গণপরিবহন।
পরে গত ৩১ মার্চ থেকে ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়ায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে শুরু হয় গণপরিবহনের চলাচল। এরপর বিধিনিষেধের কারণে গত ৫ ও ৬ এপ্রিল বন্ধ থাকে গণপরিবহনের চলাচল। অফিস খোলা রেখে গণপরিবহন বন্ধ রাখার তীব্র সমালোচনার মুখে ৭ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবারও গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে জারি করা কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ ছিলো গণপরিবহন চলাচল।