আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ) ॥ মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় ব্যবসায়ী সঞ্চয় সমিতি বেক্সিমকো গ্রুপের নামের এক ভুয়া এনজিও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা হয়েছে।
গতকাল সোমবার গভীর রাতে প্রতারক চক্রের দুইজনকে ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করে ঘিওর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো সিরাজুল ইসলাম পরশ শিকদার কথিত নাম সুমন ও সম্রাট কথিত নাম বাদল।
জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কয়েকশ সাধারন মানুষজনকে মোটা টাকার লোন দেয়ার কথা বলে ভুয়া ওই সমিতির পরিচালক কথিত জাহাঙ্গীর হোসেন টাকা নিয়ে পালিয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। বর্তমানে ভুয়া ওই সমিতির অফিসে তালা ঝুলছে। নিজের পরিচয় ও ঠিকানা গোপন রেখে জাহাঙ্গীর হোসেন নামে প্রতারক চলতি মাসের ১লা জানুয়ারী বানিয়াজুরী এলাকার আব্দুস সালাম মিয়ার বাড়ির কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নেয়। মুখের মিষ্টি কথায় আকৃষ্ট হয়ে ১০-১২ দিনেই কয়েকশ নারী পুরুষ প্রতারনার ফাঁদে পড়ে সমিতির সদস্য হন।
এরপর সদস্যদের মাঝে ব্যবসা করার জন্য জনপ্রতি এক লাখ এবং ওপরে ৫লাখ টাকা লোনের অফার দেয় প্রতারক জাহাঙ্গীর। তার সমিতিতে বেশ কয়েকজন নারী কর্মী কাজ করছেন। তাদের ব্যবহার করে সাধারন ও নিরিহ কয়েকশ মানুষ তার প্রতারনার ফাঁদে পা দিয়ে জামানত বাবদ লাখ লাখ টাকা খোয়ায়। সর্বনিম্ন ৮ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা করে সদস্যদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় সমিতির পরিচালক।
গত বৃহস্পতিবার সদস্যদের মাঝে লোন দেয়ার কথা ছিল। কিন্ত তার আগেই জাহাঙ্গীর মোটা অংকের টাকা বাগিয়ে নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার ঠিকানাও কারো জানা নেই। কথা হয় প্রতারনার শিকার বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে। ঘিওর উপজেলার ছোট বৈন্যা গ্রামের ক্ষুদে মুদি দোকানদার লুৎফর মোল্লা বলেন, ৩ লাখ টাকা লোন পাওয়ার আশায় ৩০ হাজার টাকা জামানত দিয়েছি। ১৪ জানুয়ারী অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার লোন দেয়ার কথা ছিল। কিন্ত বুধবার অফিসে গিয়ে দেখি আমার মতো শতশত মানুষের ভীড়।
এ ব্যাপারে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, গত ১৫/১/২১ জানুয়ারী ভুক্তভোগী নিশা রানী বাদী হয়ে ঘিওর থানায় একটি মামলা করে। মামলা নং ০৬ ধারা ৪০৬/৪২০ মামলার পরপরই আমরা প্রতারক চক্রদের গ্রেফতারের তদন্ত শুরু করি । আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোজখবর নিয়ে অবশেষে প্রতারক চক্রের দুইজনকে আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এরা সিরাজুল ইসলাম পরশ শিকদার কথিত নাম সুমন ও সম্রাট কথিত নাম বাদলকে ঘিওর থানা হাজতে আনা হয়।এরপর আসামীদের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।