মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় ‘ব্যবসায়ী সঞ্চয় সমিতি বেক্সিকো গ্রুপ’ নামের নামের একটি ভুয়া সমিতি গ্রাহকদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে। মোটা অংকের ঋণ দেয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষজনের টাকা নিয়ে, সমিতির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে সমিতির পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন। ঘিওর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিজের পরিচয় ও ঠিকানা গোপন রেখে প্রতারক জাহাঙ্গীর হোসেন চলতি মাসের ১ জানুয়ারী বানিয়াজুরী এলাকার আব্দুস সালাম মিয়ার বাড়ির কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে ওই সমিতির কার্যক্রম চালু করেন। ১০/১২ দিনের মধ্যেই বিভিন্ন এলাকার কয়েকশত নারী-পুরুষকে তিনি সমিতির সদস্য করেন। এরপর সদস্যদের মাঝে ব্যবসা করার জন্য সর্বনিম্ন এক লাখ ও সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা ঋণের প্রস্তাব দেয় জাহাঙ্গীর। সমিতির কয়েকজন নারী কর্মীর মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার কথা বলে জাহাঙ্গহীর ৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা সংগ্রহ করে। গতকাল বৃহস্পতিবার সদস্যদের মাঝে ঋণ বিতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু তার দুইদিন আগেই জাহাঙ্গীর সদস্যদের কাছ থেকে সংগ্রহকৃত টাকা নিয়ে গাঁ ঢাকা দেয়।

ঘিওর উপজেলার ছোট বৈন্যা গ্রামের মুদি দোকানদার লুৎফর মোল্লা বলেন, ৩ লাখ টাকা ঋণ পাওয়ার আশায় ৩০ হাজার টাকা জামানত দিয়েছি। ১৪ জানুয়ারী অর্থাৎ গতকাল বৃহস্পতিবার ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্ত বুধবার অফিসে গিয়ে দেখি আমার মতো শতশত মানুষের ভীড়। সমিতির পরিচালক আমাদের সবার টাকা নিয়ে পালিয়েছে।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম এলাকার গৃহবধু শিউলি আক্তার বলেন, দেড় লাখ টাকা ঋণের জন্য আমি ওই সমিতিতে ১০ হাজার টাকা জমা দিয়েছে। আমার মত কয়েকশত মানুষের কাছ থেকে তারা জামানত নিয়ে পালিয়ে গেছে।

সমিতির মাঠ কর্মী নিশা রানী জানান, তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ি জেলায়। চাকুরীর সুবাদে তিনি ঘিওরের তরা গ্রামে বাসা ভাড়া করে থাকেন। ১০ হাজার টাকা বেতনে তিনি ওই সমিতিতে মাঠ কর্মী হিসেবে চাকরী নিয়েছিলেন। তিনি ৬২ জনকে সদস্য বানিয়ে সদস্যদের কাছ থেকে ২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা অফিসের পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে তুলে দিয়েছেন।

সমিতি কার্যালয়ের বাড়ির মালিক সালাম মিয়া বলেন, চলতি মাসের ১ জানুয়ারী জাহাঙ্গীর হোসেন তার বাড়ি ভাড়া নেয়। ১৫ জানুয়ারী শুক্রবার অফিস ভাড়ার চুক্তি করার কথা ছিল। প্রতিমাসে ৮ হাজার টাকা করে ভাড়া ও তিন মাসের অীগ্রম টাকা দেয়ারও কথা। শুধু তাই নয় শুক্রবার অফিসটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে বলে অফিসে সাজ-সজ্জ্বার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। তবে জাহাঙ্গীরের আসল পরিচয় তিনি জানতেননা।

ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, বিষয়টি জানার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সমিতির অফিসের নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির মালিক সালাম মিয়াকে থানায় এনে জিজ্ঞাবাদ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।