আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করতে চেয়েছিল, আজ তারাই ব্যর্থ।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে গতকাল রবিবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় এ কথা বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে সারা বিশ্বে যে মর্যাদা পেয়েছে, এই মর্যাদা ধরে রেখে আমরা বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এগুলোর হাত থেকে দেশকে মুক্ত রেখে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব। জাতির পিতার এই প্রত্যাবর্তন দিবসে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা যে এই জাতি বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা এই জাতিকে ভালোবেসেছেন। আমাদের একটাই চিন্তা—যে জাতির জন্য আমাদের মহান নেতা জীবন দিয়ে গেছেন সেই জাতির কল্যাণ করা, তাদের জীবন সুন্দর করা। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমি কিন্তু কাজ করে যাচ্ছি।’
সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২১০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়ন কিভাবে হবে, সে ব্যাপারে ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় ২০৪১ সালে বাংলাদেশ কেমন হবে সেটা দিয়েছি। ২০৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন হবে। আমাদের আগামী প্রজন্ম কিভাবে তা উদযাপন করবে, সেই কথা চিন্তা করেই আমরা কিন্তু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। সেগুলো আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একমাত্র এ দেশের মাটির সন্তান অর্থাৎ ভূমিপুত্র হিসেবে বাংলার জনগণ প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্বাচনে বিজয়ী করে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। বাকিরা কেউ এ দেশের মাটির সন্তান ছিল না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে জাতির জন্য মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, বছরের পর বছর কারাগারে নির্যাতন সহ্য করেছেন, যে জাতির জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করে গেছেন—সেই বাংলাদেশের জনগণকে একটু সুন্দর ও উন্নত জীবন দেওয়াই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশ আজ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, হারানো মর্যাদা ফিরে পেয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে যে দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন, সেটা বাস্তবায়ন করতে পারলে পরবর্তী পাঁচ বছরেই বাংলাদেশ ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে পারত, এতে কোনো সন্দেহ নেই। দেশ পরিচালনা করতে বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। এই স্বল্প সময়ে জাতির পিতা এত কাজ করে গেছেন, তা সত্যিই বিস্ময়কর। এটা গবেষণা করলেই বেরিয়ে আসবে, মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু সব কিছুই করেছিলেন।’
আলোচনাসভায় সূচনা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।