স্টাফ রিপোর্টার
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ৪১ নং মান্দারতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ শাহাজাহান আলীর বিরুদ্ধে দুর্ণীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আকারে গত পাঁচ বছরে পাঁচবার অভিযোগ করেছেন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ পুরো পরিষদ। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সর্বশেষ গত ৭ জুলাই পুনরায় অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্র গুলি পর্য়ালোচনা করে জানাযায়, মোঃ শাহজাহান প্রায় ১৮ বছর ধরে এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে রয়েছেন। প্রথম দুএকবছর সততা ও দক্ষতার সাথে স্কুল পরিচালনা করলেও পরবর্তিতে তিনি দুর্ণীতি, অনিযমের সাথে জড়িয়ে পড়েন। প্রধান শিক্ষকের নজরদারী না থাকায় স্কুলের শিক্ষার মান সর্বনি¤œ পর্যায়ে পৌছেছে। সর্বশেষ পিএসসি সমাপনি পরীক্ষায় স্কুলের ১৫ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। একজনও বৃত্তি পায়নি। যারা উর্ত্তীর্ন হয়েছে তাদের ফলাফলও সন্তুষজনক নয়। অভিযোগে বলা হয় প্রধান শিক্ষকের কাছে যারা প্রাইভেট পড়ে তারাছাড়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী পাঠ্য বইয়ের বাংলা, ইংরেজি রিডিং পর্যন্ত পড়তে পারেনা। অংকে আরও কাঁচা।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবর সুর্নীষ্ট সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিই হচ্ছে প্রধান শিক্ষকের দুর্ণীতি সংক্রান্ত। এরমধ্যে রয়েছে পুরাতন বই শিক্ষা অফিসে জমা না দিয়ে বাইরে বিক্রি করে দেয়া, সরকারী নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত ফিস আদায় করা, মিলাদ মাহফিলের কথা বলে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন মহল থেকে চাঁদা আদায়, উপবৃত্তির টাকা আত্বসাৎ, সমাপনী পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের কথা বলে টাকা আদায়। স্কুল না করেই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা, সহকারী শিক্ষকদের সাথে খারাপ অচরণেরও অভিযোগ করা হয়েছে।
এছাড়াও অভিযোগে বলা হয়েছে স্কুলের জমি দখলদার কয়েকজনের বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কোর্টে মামলা করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক দখলদারদের পক্ষ নিয়ে স্বাক্ষর দেয়ায় ওই জমি এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
স্কুল কমিটির সভাপতি মোঃ সামসুল হক জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগের প্রমান তারা দিতে পারবেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে একাধীকবার অভিযোগ করলেও শিক্ষা বিভাগ থেকে অজ্ঞাত কারনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা।
এ ব্যাপারে কথা বলতে প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহাজাহান আলী ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনের মোবাইল নাম্বারে বেশ কয়েকবার রিং দিলেও তারা ফোন ধরেননি। তবে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ করিম জানান, গত ২৭ জুলাই অভিযোগ তদন্ত করা হয়েছে। দুএক দিনের মধ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে রিপোার্ট পেশ করা হবে। প্রায় ২২ দিন আগে তদন্ত করা হলেও এখন পর্যন্ত কেন রিপোর্ট দেয়া হয়নি এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ম্যানেজিং কমিটির কয়েক সদস্য জানান, গত ২৭ জুলাই তদন্তের সময় শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অধিকাংশ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মাপ চান। তারা অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক কয়েকজনকে ম্যানেজ করে তদন্ত রিপোর্ট তার পক্ষে আনার চেস্ট করছেন।