জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হাতিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত নয়াপাড়া গ্রামের ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদে গতকাল (২৬ জুন) শুক্রবার সকালের দিকে এক বিশাল আকৃতির ‘মাছ’ (ডলফিন) স্থানীয় জেলের জালে ধরা পড়েছে। মাছটির ওজন ১০৫ কেজি, দৈর্ঘ্য ৭ ফিট। 

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভোরের দিকে নয়াপাড়া গ্রামের স্থানীয় এক জেলের জালে মাছটি ধরা পড়ে। প্রথমে সবাই ভেবেছিল যে এটি কোনো মৃত গরু বা মহিষ। পরে জাল থেকে মাছটি ডাঙায় তোলার পর দেখা যায় যে, এটি একটি মাছ। দীর্ঘক্ষণ পানির বাইরে থাকায় ডাঙায় তোলার পর মাছটি মারা যায়। এটি কি প্রজাতির মাছ সে সম্পর্কে স্থানীয় কেউ কোনো তথ্য দিতে পারেননি তবে  কেউ কেউ বলেন যে এটি মিঠাপানির শিশু মাছ। 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর ছালাম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের নয়া গ্রামের এক জেলের জালে মাছটি ধরা পড়েছিল। পরে মাছটি মারা গেলে মাটিতে পুঁতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। বিশাল আকৃতির মাছটি নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল’।

জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এস এম আল ফাহাদ এই মাছটি সম্পর্কে বলেন, ‘এটি বিপন্ন গাঙ্গেয় ডলফিন। এটি জেলেদের জালের আঘাতে অথবা প্রপেলারের আঘাতে মারা যেতে পারে। এরা এ দেশে শুশুক, শিশু ও শিশু মাছ নামেও পরিচিত। দেশের অভ্যন্তরীণ বড় বড় নদী, মোহনা ও সুন্দরবনের নদীগুলোতে এদের দেখা যায়। নদীর মাঝারি গভীরতায় থাকতে এরা পছন্দ করে। ধূসর রঙের এই প্রাণীটির মাথা ছোট ও শরীর বেশ নরম। এদের লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো লম্বা ঠোঁট’।

তিনি আরো জানান, ছোট ছোট চোখ দুটি ঠোঁটের ওপর অবস্থিত হলেও এরা এটা দিয়ে খুব ভালো দেখতে পায় না। এরা একাকী, জোড়ায় জোড়ায় থাকে এবং মাঝে মাঝে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য পানির ওপর উঠতে দেখা যায়। জলজ জীব-বৈচিত্র্যের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে ডলফিন বা শুশুক।