রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক ইউনিয়নের জপুই পাড়া থেকে যতীন ত্রিপুরা (৩৩) নামে ত্রিপুরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক যুবককে উন্নত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনী ও বিজিবির সহায়তায় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বুধবার সাজেকের জপুই এলাকাতে জুম চাষের সময় উঁচু পাহাড় থেকে দুর্ঘটনাবশত পড়ে গিয়ে নিচে থাকা বাঁশের আঘাতে মারাত্মকভাবে জখম হন যতীন ত্রিপুরা। স্থানটি অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় সেখানে চিকিৎসা সুবিধা খুবই অপ্রতুল। এই অবস্থায় আহত যতীন ত্রিপুরাকে নিকটতম জপুই বিওপিতে আনা হলে বিজিবি তাকে প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়। কিন্তু আঘাতের মাত্রা বিবেচনা করে জীবন রক্ষায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে নেয়া প্রয়োজন বলে বিজিবি বিষয়টি খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নকে জানায়।
এরপর খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন বিষয়টি তাত্ক্ষণিকভাবে ২৪ পদাতিক ডিভিশনকে (চট্টগ্রাম সেনানিবাস) জানায় এবং হেলিকপ্টারের মাধ্যমে যতীনকে উন্নত চিকিত্সার জন্য চট্টগ্রামে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করে। বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনায় নিয়ে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান তাকে দ্রুত হেলিকপ্টারের মাধ্যমে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেন।
এই নির্দেশ পাওয়ার পর রবিবার বিকেলে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী জহুর ঘাঁটি’র একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে যতীন ত্রিপুরাকে প্রথমে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে আসা হয় এবং পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এর আগেও ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সোনাপতি চাকমা এবং গত বছরের ২৯ এপ্রিল জতনি তঞ্চংগ্যা নামে দুই প্রসূতিকে এবং গত বছর ১২ মে দূর্গম পাহাড়ে ভাল্লুকের আক্রমণে ক্ষত-বিক্ষত আহত পণবিকাশ ত্রিপুরাকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম এনে প্রাণ বাঁচায় সেনাবাহিনী।
এছাড়াও গত ২৫ মার্চ রাঙামাটির সাজেকের দুর্গম এলাকা লুংথিয়ান ত্রিপুরা পাড়ায় হামে আক্রান্ত মুমূর্ষু পাঁচ শিশুকে বাঁচাতে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে প্রয়োজনীয় চিকিত্সা সেবার ব্যবস্থা করা হয়।