বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক জানিয়েছেন, দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর মধ্যে এ পর্যন্ত ৮৭ শতাংশ কারখানার শ্রমিকরা গত মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও কয়েকটিতে বেতন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল।
আগামী ২০ এপ্রিল অনেক কারখানাতে বেতন দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে শতভাগ কারখানায় বেতন পরিশোধে নতুন করে সময় নিয়েছে বিজিএমইএ।
করোনাভাইরাস সংকটের কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মাসের বেতন পরিশোধের শেষ তারিখ ছিল বৃহস্পতিবার।
এদিকে সাধারণ ছুটির সর্বশেষ মেয়াদ শেষে আগামী ২৬ এপ্রিল কারখানা খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে অবশ্য এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলা হয়নি। তবে অস্বীকারও করা হয়নি। জানতে চাইলে রুবানা হক বলেন, শিগগির এ বিষয়ে জানাবেন তারা।
সাধারণত মাসের প্রথম সাত কর্মদিবসের মধ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করে থাকে পোশাক কারখানাগুলো। করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক প্রভাবে বিদেশি ক্রেতারা একের পর এক বেশিরভাগ কারখানার রপ্তানি আদেশ বাতিল করে। অনেক ক্রেতা দরও কম দিচ্ছে। কেউ দেরিতে মূল্য পরিশোধের কথা জানিয়েছে। এতে অর্থ সংকটে পড়েছে অনেক কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ কারণে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ সম্ভব হয়নি অনেক কারখানায়।
এমন সংকটের মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর মধ্যস্থতায় ১৬ এপ্রিলের মধ্যে সব কারখানায় বেতন পরিশোধের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে এ সময়ের মধ্যে বেতন না হওয়ায় গত কয়েক দিনের মতো বৃহস্পতিবারও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে অডিও বার্তায় বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, কিছু কারখানার শ্রমিকরা এখন রাস্তায় আছেন, যারা বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্য নয়। তবে আগামী ২০ কিংবা ২২ এপ্রিল না হলেও অন্তত ২৫ এপ্রিলের আগে সব কারখানায় বেতন পরিশোধ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এমতাবস্থায় বিভিন্ন কারখানায় বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভের মধ্যে গত সোমবার যে কোনো পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেতন পরিশোধে মালিকদের উভয় সংগঠনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়। এতে বলা হয়, নির্ধারিত তারিখে বেতন পরিশোধ করা না হলে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা তহবিল থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়া নিয়ে জটিলতা হতে পারে। এর পরও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিজিএমইএর সদস্য ১৩ শতাংশ কারখানা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে পারেনি। উৎপাদনে রয়েছে বিজিএমইএর এমন সদস্য এখন দুই হাজার ২৭৪ কারখানা। এগুলোর শ্রমিকের সংখ্যা ২৪ লাখ ৭২ হাজার ৪১৭।
এদিকে বৃহস্পতিবার এক অডিও বার্তায় বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ৮৭ শতাংশ কারখানার বাইরে যেসব কারখানা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বেতন পরিশোধ করতে পারেনি সেগুলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি। তিনি বলেন, ক্রেতারা আদেশ বাতিল করেছে। স্থগিতও করেছে অনেক। আবার দর কম দিচ্ছে। এ জন্য এসব কারখানা শ্রমিকদের বেতন দিতে পারেনি। এগুলোকে সংগঠনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের কর্মঘণ্টা কমে আসা এবং লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণেও অনেক কারখানা বেতন পরিশোধে সমস্যায় পড়েছে।