জনমত ডেস্ক, ১৪ এপ্রিল। কেউ জানে না কবে থামবে মহামারি ‘করোনা’ ঝড়। কী আছে শেষে। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাচ্ছে। মনে হচ্ছিল, এই বুঝি আরেক সপ্তাহ, অথবা দুই সপ্তাহ, তারপর সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু, দিন দিন সবকিছু আরও ভয়াবহ হচ্ছে। এখন সবার মনে একটাই প্রশ্ন, কবে এর শেষ হবে?

অল্প কথায় এই প্রশ্নের উত্তর হলো, কেউ নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না। এটা সম্পূর্ণ নতুন একটি ভাইরাস, যার চরিত্র সম্পর্কে কারও কোনো ধারণা নেই। উপরুন্ত এই ভাইরাস খুবই ইন্টিলিজেন্ট, জিনের গঠন বদলে প্রতিনিয়ত নিজের চরিত্রই বদলে ফেলছে। অতীতে যেকোনো মহামারি ১২ থেকে ৩৬ মাস স্থায়ী হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় ‘করোনা’ কত দিন স্থায়ী হতে পারে, সেটা অনেকখানি নির্ভর করছে ভ্যাকসিন আবিষ্কার ওপর।

ফিলিপাইনের স্বাস্থ্যবিষয়ক সচিব মারিয়া রোজারিও ভার্জায়ার সোমবার (১৩ এপ্রিল) বলেছেন, কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কার না হলে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে করোনভাইরাস মহামারিটি স্থায়ী হতে পারে।

ভার্জায়ার রাষ্ট্র পরিচালিত পিটিভি -৪ এ প্রচারিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলছিলেন, অ্যাং আতিন পং এর গণনা বিজ্ঞানীরা আমাদের জানিয়েছেন, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি পরের বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। আমাদের গণনা বিজ্ঞানীরা গাণিতিক চিহ্ন ও বৈজ্ঞানীক পরিসংখ্যান মিলিয়ে অনুমান করে থাকেন। তাদের গবেষণার ভিত্তিতে, মহামারিটির সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত স্থায়ী হতে। টিকা আবিষ্কার না হলে এটি ঘটবে।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। অনেকেই সফলতার দ্বারপ্রান্তে বলা হলেও ভার্জায়ারের মতে, ‘অন্যান্য দেশগুলি যেসব করোনভাইরাস ভ্যাকসিন তৈরি করছে সেগুলো সফল হলেও বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হতে প্রায় ৬ থেকে ১২ মাস বা এমনকি এক থেকে দেড় বছর সময় নিতে পারে।’

সোমবার পর্যন্ত ফিলিপাইনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৯৩২ জন। এদের মাঝে মৃত্যু হয়েছে ৩১৫ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৪২ জন। দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছেন যে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফিলিপাইনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ হাজার থেকে ৭৫ হাজারে পৌঁছে যেতে পারে।

ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পৃথক সমীক্ষা আরও বলেছে যে, এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে দেশে করোনভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বেড়ে যেতে পারে। কেবল মেট্রো ম্যানিলায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে স্বাস্থ্যকর জীবন ব্যবস্থা মেনে চলা এখন সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যেটা দীর্ঘ মেয়াদে কাজে দেবে। পর্যাপ্ত ঘুম, সুষম খাবার, গরম পানি পান, হাত পরিষ্কার রাখা, ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া, ব্যায়াম করা ইত্যাদি বাড়িয়ে দিতে হবে। যার ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী সে এই ভাইরাসের মোকাবিলা করবে। বাকিরা পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে।

সূত্র- র‍্যাপলার।