মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ ১৪ মার্চ
মানিকগঞ্জের সিংগাইর ও দৌলতপুরে তিনটি হত্যা মামলায় শুধু মাত্র তদন্তকর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহনের অভাবে নিষ্পতি করা যাচ্ছে না দীর্ঘ দিনেও । ১৬ বছর ধরে মামলাগুলো ঝুলে আছে শুধু তদন্তকর্মকর্তাদের সাক্ষ্য না পাওয়ার কারণে। অথচ মানিকগঞ্জে গত বছর জেলা জজশিপ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি ও জেলা লিগ্যাল এইডের গড়ে ১০৪ ভাগ মামলা নিষ্পতি হয়েছে। শনিবার মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সভাকক্ষে বার্ষিক বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ বেগমের সভাপতিত্বে বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখনে জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মাসুদ আলী শেখ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শাহানা হক সিদ্দীকা, জিপি মেহের উদ্দিন, অতিরিক্ত পিপি মথুর নাথ সরকার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জামিলুর রশিদ, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর হোসেন, পারভেজ আহমেদ ।
বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে ২০১৯ সালে দেওয়ানি মোকদ্দমার সার্বিক তথ্য উপস্থাপন করেন সহকারী জজ আইভি আক্তার। এতে জানানো হয় ২০১৯ সালে ২২০৬টি মামলা দায়ের হয়েছে আর নিষ্পতি হয়েছে ২৯২২টি। আদালতে মোট মামলার নিষ্পতির হার ১৩২ ভাগ। ফৌজদারী মামলা দায়ের হয়েছে ২৮২৯টি আর নিষ্পতি হয়েছে ২১০৪টি। আদালতে মোট মামলার নিষ্পতির হার ৭৪ ভাগ।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতে মামলার সার্বিক তথ্য উপস্থাপন করেন সহকারী জজ লায়লা শারমিন। এতে জানানো ২০১৯ সালে মামলা দায়ের হয়েছে ১০১৬টি আর নিষ্পতি হয়েছে ৬২৪টি। আদালতে মোট মামলার নিষ্পতির হার ৬১ ভাগ। জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সার্বিক তথ্য উপস্থাপন করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রওশন জাহান। এতে জানানো হয় ২০১৯ সালে ৩০৯৪টি মামলা দায়ের হয়েছে আর নিষ্পতি হয়েছে ৪১৪১টি। আদালতে মোট মামলার নিষ্পতির হার ১৩৪ ভাগ। জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের সার্বিক তথ্য উপস্থাপন করেন সহকারী জজ আরিফা চৌধুরী। এতে জানানো হয় ২০১৯ সালে ২৩৪টি মামলা দায়ের হয়েছে আর নিষ্পতি হয়েছে ২২২টি। আদালতে মামলা নিষ্পতির হার ৯৫ ভাগ।
জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ বেগম বলেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে বিচারকগন তাদের উপর দায়িত্ব অক্লান্ত শ্রম, মেথা ও মনন দিয়ে পালন করে যাচ্ছে। বিচার প্রার্থীদের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা কেবল বিচারকদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। বিচার কাজে সহায়ক তথ্য সহযোগি প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে পারষ্পারিক যোগাযোগ ভুল ভ্রান্তি এবং সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই এই বিচার বিভাগীয় সম্মেলনের আয়োজন।
বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে আরো জানানো হয় পুরাতন মামলা নিষ্পতিতে বিচারকরা কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রীয় সাক্ষী সঠিক সময় আদালতে আনা হয় না। অনেক সময় সাক্ষীদের সমন জারি করে আদালতে আনা যায় না। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন সঠিক সময় না আসাও মামলার দীর্ঘসূত্রিতা তৈরী হয়। এই সব সমস্যা সমাধানের জন্য পুলিশের আরো সক্রিয় ভূমিকার রাখার আহবান জানান।