রাজধানীর ওয়ারীতে সিলভারডেল স্কুলের নার্সারির ছাত্রী সামিয়া আফরিন সায়মা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আসামি হারুন অর রশিদকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (৯ মার্চ) সকালে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক কাজী আবদুল হান্নান এ রায় দেন।রায় ঘোষণাকালে একমাত্র আসামি হারুন অর রশিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন হারুন। শুনানির দিনও আসামিপক্ষের আইনজীবী তাঁকে খালাস দেওয়ার দাবি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ হারুনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।
গত বছরের ৫ জুলাই সন্ধ্যার পর ওয়ারীর একটি বাড়ির ৯ তলায় শিশু সায়মার লাশ পাওয়া যায়। ওই বাড়ির ৬ষ্ঠ তলায় সায়মা তার পরিবারের সঙ্গে থাকতো। লাশ পাওয়ার আগে সে তার মাকে ওপরের তলায় খেলতে যাচ্ছিল বলে জানায়। কিন্তু সে ফিরে না আসায় তার খোঁজ করতে গিয়ে নবম তলায় গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় সায়মার মরদেহ পাওয়া যায়। পরে ওই ঘটনায় সায়মার বাবা আবদুস সালাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় মামলা করেন।
এরপর পুলিশ গত বছরের ৭ জুলাই কুমিল্লার তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গা এলাকা থেকে হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন হারুন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে সায়মাকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। জবানবন্দিতে বলেন, এক মাস আগে থেকে তার খালাতো ভাই পারভেজের বাসায় ছিলেন তিনি। ওয়ারীতে যে ভবনে ঘটনা ঘটে, ওই ভবনের সাত তলায় পারভেজ থাকতেন। ঘটনার আগে ভবনের লিফট দিয়ে নামার সময় সায়মার সঙ্গে তার দেখা হয়। লিফটইে তিনি সায়মার সঙ্গে খারাপ কাজ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। পরে ছাদ দেখার কথা বলে তিনি সায়মাকে ছাঁদে নিয়ে যান। ছাঁদে নিয়ে সায়মাকে তিনি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু সায়মা চিৎকার করতে থাকে। মুখ চেপে ধরে সায়মাকে তিনি ধর্ষণ করেন।
ধর্ষণের একপর্যায়ে সায়মা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখন হারুন ভয় পান। সায়মার জ্ঞান ফিরলে সে মানুষের কাছে ঘটনা বলে দেবে। এ কারণে যাতে ঘটনা প্রকাশ না পায় সেজন্য গলায় দড়ি পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। পরে সায়মাকে টেনে নিয়ে রান্না ঘরের সিলিংকের নিচে ফেলা হয়। এরপর তিনি (হারুন) পালিয়ে যান।