যাত্রীবেশে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী নৈশ বাসে উঠে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারধর, লুটপাট ও এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শেষে বাসটির পথ পরিবর্তন করে টাঙ্গাইলের মধুপুরে রক্তিপাড়া এলাকায় নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতদল।
বাসের যাত্রী ও পুলিশ সূত্র বলেছে, গত মঙ্গলবার রাতে আন্তজেলা ডাকাতদলের সদস্যরা টানা তিন ঘণ্টা বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়। পুলিশ যাত্রীদের উদ্ধার করেছে।
ধুপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, বড়াইগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া একটি বাসে এমন ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের নামে মামলা করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। তবে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা যায়নি। ওই নারী যাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হবে।
নাটোরের বড়াইগ্রামের বাসিন্দা ফল ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান হাবিব ওই বাসের নিয়মিত যাত্রী। তিনি বড়াইগ্রামের তরমুজ চত্বর থেকে আমড়া, কাঁঠাল, তালসহ বিভিন্ন ফল ঢাকায় নিয়ে যেতে গত মঙ্গলবার রাতে ওই বাসে ওঠেন। বাসটি সিরাজগঞ্জের কাছাকাছি একটি হোটেলে নৈশ ভোজের জন্য যাত্রা বিরতি দেয়। পরে রাত দেড়টার দিকে আবার যাত্রা শুরু করে। পথে কাঁধে ব্যাগ বহন করা ১০-১২ জন যুবক যাত্রীবেশে বাসে ওঠে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর ওই যুবকরা অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। সব যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল, টাকা, গয়না লুট করে। তারপর এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। চালককে জিম্মি করে বাস বিভিন্ন সড়কে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়ায় বালির ঢিবিতে ঠেকিয়ে ডাকাতদল নেমে পালিয়ে যায়।
সকালে সংবাদ পেয়ে মধুপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গাড়িতে থাকা দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের কথা স্বীকার করেছেন মধুপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক। বিকেল ৫টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ডিবি পুলিশের একটি দল তদন্তকাজ চালাচ্ছে। পুলিশের সহযোগিতায় একদল উদ্ধারকর্মী বাসটি উদ্ধার করছেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। তিনিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বাসযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এসপি বলেন, তদন্ত কাজে ভালো অগ্রসর হয়েছে। কাউকে আটক করা হয়নি। সময় হলে গণমাধ্যমকে সব জানানো হবে।