আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের সিংগাইরে সাইদুর রহমান (৪৫) নামের বিদেশ ফেরত এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন। গত জুন মাসের ২১ তারিখ তিনি কুয়েত থেকে ঢাকায় হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে অবতরণ করেন। পণ্য বহনের বুকিং রিসিভ এবং ইমিগ্রেশন করাও হয়। স্বজনরা তাকে আনার জন্য বিমান বন্দরে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু সাইদুরকে আর পান নি। সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বজনরা অপেক্ষা করে চলে আসেন। এরপর তিনদিন তারা আতœীয় স্বজন, বিদেশে তার সহকর্মী, থানা, এয়ারপোর্ট খোঁজ করেও তার সন্ধান পান নি।
এ ব্যাপারে গত জুন মাসের ২৫ তারিখে সাইদুরের স্ত্রী রেহেনা বেগম ঢাকা মেট্টোপলিটনের বিমান বন্দর থানায় সাধারন ডায়রী (জিডি) করেন।
নিখোঁজ সাইদুর রহমান সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের বাইমাইল গ্রামের সুলতান আহমেদের ছেলে। সাইদুর ৩ সন্তানের জনক। নিখোঁজ সাইদুরের পরিবার গতকাল শুক্রবার বিকালে সাংবাদিকদের বলেন, সাইদুর ও তার মা কুয়েতে একই মালিকের কাজ করেন। সাইদুর বাড়ি ফিরে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করবেন। কুয়েত বিমান বন্দরে মালামাল বুকিং দিয়ে তিনি বিমানে উঠার সময় পরিবারের সাথে কথা বলেন। ২১ জুন সকাল সাড়ে আটটার দিকে তিনি ঢাকা পৌছবেন। সেই অনুযায়ী পরিবারের লোকজন তাকে আনতে বিমান বন্দরে যান। কিন্তু তাকে আর পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২৫ দিন অতিবাহিত হলেও নিখোঁজ হওয়া সাইদুরের সন্ধান না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে ভেঙে পরেছেন। উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিখোঁজ থাকায় সংসারে নেমে এসেছে ঘোড় অন্ধকার।
সাইদুরের স্ত্রী রেহেনা বেগম বলেন, আমার স্বামী সৌদি এয়ার লাইনস-এর কুয়েত হতে রিয়াদ হয়ে হযরত শাহ জালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে সকাল ৮.৩০ পৌঁছায়। তার পাসপোর্ট নং ইঅ ০৫৭৬১৫৯। বিমান বন্দরের সমস্ত কাজ সম্পন্ন করে নিজ বাড়ীতে যাওয়ার কথা। আমরাও তাঁর আসার অপেক্ষায় গাড়ী নিয়ে বিমান বন্দর টার্মিমাল এলাকায় অপেক্ষায় থাকি। কিন্তু অপেক্ষার শেষ হয় না । পরবর্তিতে এক মাধ্যমে জানতে পারি যে, আমার স্বামী এয়ারপোটের সমস্ত কাজ শেষে করে বের হয়ে গেছে। এখন তার কোন খোঁজ পাচ্ছিনা। অনেক খোঁজাখুজি করছি। বিমান বন্দর থানায় জিডি করছি। কিন্তু কিছুতেই আমার স্বামীর খোঁজ মিলছে না। তিন সন্তান ওদের বাবার অপেক্ষায় কান্নাকাটি করছে। আমি আমার স্বামীর সন্ধান চাই। এরপর তিনি কান্নায় লুটিয়ে পড়েন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন দেওয়ান বলেন, সাইদুর খুবই সহজ-সরল ছেলে। তার অবর্তমানে পুরো পরিবার অন্ধকারে পড়ে যাবে। তার সন্ধান পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এই বিষয়টির তদন্তকারী বিমান বন্দর থানার এস আই আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, সাইদুর রহমান নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ভূক্তভূগী পরিবারকে বিমান বন্দরের ওই সময়ের ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাইদুরের খুঁজে পেতে কাজ চলমান রয়েছে।