ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়ছিলেন ২০ বছর বয়সী ভারতীয় শিক্ষার্থী আর্য অলড্রিন। যুদ্ধ থেকে বাঁচতে দেশটি ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন। একা আসেননি, সঙ্গে নিয়ে এসেছেন পোষা সাইবেরীয় হাস্কি প্রজাতির কুকুর জাইরাকেও। সেই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ার কল্যাণে এখন সবার মুখে মুখে।

অনলাইনে অনেকেই যেমন প্রশংসা করেছে আর্যর পশুপ্রেমের, নিন্দাও কম হয়নি। মানুষ বাদ দিয়ে নিজের কুকুরকে বিমানে উড়িয়ে আনায় কেউ কেউ স্বার্থপর বলেছেন আর্যকে। তবে আর্য মনে করেন পোষা কুকুরটাকে ফেলে আসাটাই হতো স্বার্থপরতা। তাকে ছাড়া যে জাইরার এক মুহূর্তও চলে না!

পাঁচ মাস বয়সী জাইরাকে নিয়ে দুঃসহ যাত্রার পর নিরাপদেই হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের দক্ষিণ ভারতের কেরালায় পৌঁছেছেন আর্য।

২০২০ সালে ইউক্রেনের ভিন্নিতসিয়ার ন্যাশনাল পিরোগভ মেমোরিয়াল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ডাক্তারি পড়তে যান আর্য। সেখানে কেরালার অনেককে বন্ধু হিসেবে পান তিনি। এক বন্ধু জানতেন আর্য প্রাণী ভালোবাসেন। সেই বন্ধুটি গত বছরের ডিসেম্বরে দুই মাস বয়সী একটি কুকুরছানা উপহার দেন তাকে। সেই এখনকার আলোচিত জাইরা।

অনেক ভারতীয় শিক্ষার্থীই ইউক্রেন থেকে তড়িঘড়ি ফেরার সময় পোষা বিড়াল ও কুকুর নিয়ে এসেছেন। তবে আর্য গণমাধ্যমের শিরোনামে পরিণত হন রুমানিয়া সীমান্তে একটি বাসে জাইরাকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় তোলা ছবির কারণে। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে।

আর্য জানান, জাইরা বিমানে মানুষের জায়গা দখল করে আসেনি। রুমানিয়া থেকে দিল্লি পর্যন্ত উড়োজাহাজের মাল বহনের (কার্গো) অংশে একটি খাঁচায় ভরে তাকে আনা হয়। আর্যর কথায়, ‘চিকিৎসাশাস্ত্রের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের শেখানো হয়, মানুষ না পশু তা বিচার করা ছাড়াই জীবন বাঁচাতে হয়। এমন নয় যে জাইরাকে রেখে এলে অন্য কারো উপকার হতো। ’

গাড়ির লম্বা লাইনের কারণে আর্যদের বহন করা বাসটি তাদের নামিয়ে দিয়েছিল রুমানিয়া সীমান্তের ২০ কিলোমিটার দূরে। আর্যদের সেখান থেকে পুরোটা পথ হাঁটতে হয়। পাঁচ মাস বয়সী কুকুরটা একসময় ক্লান্ত হয়ে পড়লে তাকে কোলে নিয়ে বাকিটা পথ হাঁটেন আর্য। প্রায় ১৬ কেজি ওজনের জাইরাকে বহন করার জন্য একে একে সঙ্গের প্রায় সব জিনিসই ফেলে দিয়েছিলেন তিনি।

সূত্র : বিবিসি