আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর, মানিকগঞ্জ: ৩৫ বছর ধরে মানিকগঞ্জের ঘিওরে সরকরী জায়গা দখলসহ বিভিন্ন দোকানপাট ও ঘরবাড়ি তৈরি করে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছিলেন ১০টি পরিবার। এসব দখলদারদের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এখন তারা খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে।

উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলি জানান, পয়লা ইউনিয়নের ছোট বরুরিয়া গ্রামে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ এর তত্বাবধানে ও ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ হামিদুর রহমান এর নির্দেশক্রমে উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভুমি) মোঃ মোহছেন উদ্দিন এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচানা করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছোট বরুরিয়ার মৃত কাশেম আলীর দুই ছেলে অন্জু, মন্জু ৩৮ শতাংশ, মৃত ফকির চানের ছেলে ফটিক ২৩ শতাংশ, মিজানুর, মহির উদ্দিনের ছেলে ফরিদ, মালেক ৫ শতাংশ, মৃত মইজুদ্দিনের ছেলে বেলাল, খৈইমুদ্দিনের ছেলে হেলাল ও দেলোয়ার ৮ শতাংশ মোট ৭৪ শতাংশ জায়গার মধ্যে প্রায় ৩৫ বছর যাবত সরকারি জায়গায় বসবাস করে আসছেন। জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য গত বছর ১৪ মার্চ তাদেরকে ঘিওর উপজেলা সহকারী কমিশনার নোটিশ দেন। এছাড়াও গত চার দিন আগে পুনরায় নোটিশ পাওয়ার পরেও তাদের অন্য কোথাও যাওয়ার যায়গা না থাকায় তারা ওখানে থেকে যায়।

উচ্ছেদে ঘরবাড়ি হারানো মোঃ খৈমুদ্দিন (৭০) বলেন, ৩০/৩৫ বছর পূর্বে এইখানে ছিল নিচু হালট ও ডোবা। আমরা নিজ খরচে মাটি ভরাট করে ঘর বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছি। এখন আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়া হলো, আমরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পাব কোথায়?

চোখের সামনে কষ্ট করে গড়ে তোলা বাড়ি ঘরের অবস্থা দেখে হাউ মাউ করে কাঁদছেন বিধবা মালেকা বেগম (৬০)। তিনি বলেন, চার সন্তান নিয়ে এখানে ৩০ বছর ধরে বসবাস করছি। সরকার যদি আমাগো একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই দেয়, তাহলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে যাব।

উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভুমি) মোঃ মোহছেন উদ্দিন বলেন, প্রায় ৩০/৩৫ বছর যাবত সরকারি জায়গায় বসবাসরত ১০টি পরিবারকে পূর্ব ঘোষিত সময় মোতাবেক ছোট বরুরিয়া এলাকা থেকে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত করা হয়েছে।

এদিকে উচ্ছেদে সর্বস্ব হারানো পরিবারের মানুষজন তাদের দারিদ্রতা বিবেচনা করে এই খাস জমি লিজ আকারে বন্দোবস্তের দাবি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকের কাছে।

উল্লেখ্য গত বুধবার দিনব্যাপী ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের ছোট বরুরিয়া গ্রামে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন ঘিওর উপজেলা প্রশাসন, সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও থানা পুলিশ। অভিযানে দশটি পরিবারের পাকা, আধাপাকা ও টিনসেডসহ অবৈধ স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।