একদিকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি চেয়ে জাতিসংঘের বিবৃতি বারবার আটকে দিচ্ছে, অন্যদিকে ইসরায়েলকে সংঘাত কমিয়ে যুদ্ধবিরতির পথে যাওয়ার কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বুধবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে সংঘাত ‘উল্লেখযোগ্য হারে কমানোর’ কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

ফোনে নেতানিয়াহুকে বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েল আজকের (গতকাল) মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে সংঘাত কমিয়ে যুদ্ধবিরতির পথে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

এর আগের দিন গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির মুখে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত বন্ধে যুদ্ধবিরতির বিবৃতি দিতে পারেনি জাতিসংঘ। এদিন সংস্থার নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠকে ওই বিবৃতির বিরুদ্ধে ভেটো দেয় স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র। ফলে বিবৃতি প্রকাশ করা যায়নি। যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দেওয়ার উদ্যোগে এর আগেও বাধা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ফ্রান্স, মিসর ও জর্দান একসঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদে ওই প্রস্তাব পেশ করেছিল।

অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুদ্ধবিরতি চেয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বরেল জানিয়েছেন, হাঙ্গেরি ওই প্রস্তাবে সই করতে রাজি হয়নি।

এদিকে ইসরায়েল ও হামাসের লড়াই অব্যাহত আছে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গতকাল গাজার আবাসিক এলাকার কয়েকটি ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। হামলায় এক সাংবাদিকসহ চার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আর হামাসের সামরিক শাখা ইয্যাদ্দিন কাসসাম ব্রিগেড জানিয়েছে, তারা দখলদার ইসরায়েলের ছয়টি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা চালিয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলি বাহিনী জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকার কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদের হুমকি দেয়। মূলত এ ঘটনার পরই নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয় জেরুজালেমে। ইসরায়েলের হামলায় গতকাল পর্যন্ত ৬৩ শিশুসহ প্রাণ গেছে ২১৭ ফিলিস্তিনির।

অন্যদিকে জেনেভায় জাতিসংঘ ত্রাণ সংস্থার মুখপাত্র জেন্স লায়ের্ক গত মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ৫২ হাজার মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৭ হাজার ব্যক্তি জাতিসংঘ পরিচালিত ৪৮টি স্কুল ভবনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া পুরো গাজা উপত্যকায় ৬৫০টি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। সূত্র: এএফপি, ডয়চে ভেলে।