তিনতলা বাড়ির ছাদে উঠে প্রতিদিনই ভাড়াটিয়া জুয়েল আহম্মদ সবুজ প্রতিবেশী ভবনের মেয়েদের বিরক্ত করছিল। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির মালিক ফরহাদ হোসেন তাকে এসব করতে নিষেধ করেছিলেন। তারপরও উত্ত্যক্ত বন্ধ না করায় সবুজকে চড়থাপ্পড় দিয়ে সংশোধন করতে চেষ্টা করেন ফরহাদ হোসেন। তবে সেই চড়থাপ্পড়ই যে নিজের শিশুসন্তানের জীবনে কাল হয়ে আসবে কে জানত!
গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানার পারিজাত গ্রামের আমতলা এলাকার বাড়ির আঙিনায় প্রতিদিনই ফরহাদ হোসেনের ছোট ছেলে আলিফ হোসেন (৫) বাইসাইকেল নিয়ে খেলত। ছোট্ট শিশুটির ওপরই সেই চড়ের প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে সবুজ। পরিকল্পনা মতো গত ২৯ এপ্রিল বিকেলে সবুজ ও তার বন্ধু সাগর হোসেন শিশুটিকে ডেকে নিয়ে যায় ভাড়া বাড়ির তিনতলার তুলার গোডাউনে। সেখানে তারা তাকে গলা টিপে হত্যা করে একটি প্লাস্টিকের ড্রামের ভেতর রেখে দেয়।
র্যাব-১, পুলিশ ও অপহৃতের পরিবারের সদস্যরা জানান, আলিফের মুক্তির জন্য ২০ লাখ টাকাও চেয়েছিল অপহরণকারীরা। শনিবার রাতে র্যাব সদস্যরা পূবাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাগরকে আটক করেন। পরে তার স্বীকারোক্তিতে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। সাগর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মুদিপাড়া গ্রামের রফিক উল্লাহর ছেলে। সবুজ, সাগর এবং তাদের আরও এক বন্ধু মিলে ফরহাদ হোসেনের বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থেকে গার্মেন্টে চাকরি করে আসছিল।
কোনাবাড়ী থানার ওসি তদন্ত মিজানুর রহমান জানান, শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মামলা করবেন।
র্যাব জানায়, মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার জন্য ফরহাদ হোসেন অপহরণকারীদের জানানো স্থানেই হাজির হন। র্যাবের গাজীপুর ক্যাম্পের সদস্যরা থাকেন তার সঙ্গে। এ ক্যাম্পের ইনচার্জ লে. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, এ সময় সুকৌশলে সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে মূল হোতা জুয়েল পালিয়ে যায়।