জনমত ডেস্ক, ১৪ এপ্রিল। রাজশাহীর তানোরে ছাত্রদলের এক সাবেক নেতার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আনসার সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার সন্ধ্য ৭টার দিকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেকসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা তানোর পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থান নির্ধারণের জন্য গেলে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনার পরে রাত সাড়ে ৮টায় দিকে আটককৃত তানোর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি উপজেলা সদরের আমশো গ্রামের মৃত আবদুল হামিদ মন্ডলের ছেলে আবদুল মালেক মন্ডলকে (৩২) তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট সুশান্ত কুমার মাহাতো ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধ আইনে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।
হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেক, তার গাড়ি চালক সুজন (৩৫) এবং আনসার সদস্য আল-আমিন (২৮) ও রাজিব (৩০)। তবে তাদের আহতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
আজ মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্ধারিত আমশো ওই বিদ্যালয়ের আশপাশের পাড়ার পুরুষরা নিজ নিজ বাড়ি থেকে পুলিশের ভয়ে অন্যথায় পালিয়ে রয়েছে।
ইউএনও সুশান্ত কুমার মাহাতো জানান, তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ঢাকা, গাজিপুর এবং নারায়ণগঞ্জে কর্মরত আছেন। কয়েকদিন আগে শতাধিক ব্যক্তি এসব এলাকা থেকে তানোরে আসেন। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজর আসলে তানোরের তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্বাচিত করা হয়।
তিনি আরো জানান, একারণে সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেক তানোর পৌর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। এ সময় সেখানে দেড় থেকে দুই শ লোকের সমাগম দেখেন। লোকজনের সমাগম দেখে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেক তাদেরকে ওই এলাকা থেকে সরে যাবার অনুরোধ জানান। এ সময় স্থানীয়রা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আনসার সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তারা সেখানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ব্যবহার করা যাবে না বলে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে আনসার সদস্যরা এক ব্যক্তিকে লাঠি দিয়ে মারে। এ সময় স্থানীয় লোকজন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালায়।
হামলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ চারজন আহত হন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল মালেক মন্ডলকে আটক করা হয়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেকের ডান হাতে আঘাত রয়েছে। ঘটনার পর তিনি স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। তার ডান হাতে ব্যান্ডেজ রয়েছে। ঘটনার সময় নির্বার্হী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেকের গাড়িচালক সুজন এগিয়ে না আসলে তিনি বড়ধরনের হামলার শিকার হতেন।
তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেক বলেন, সেখানে কিছু লোকজন জনসমাগম করেছিলেন। করোনা প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে তাদেরকে সরে যেতে বলায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তানোর থানা ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, এলাকার লোকজন নিজেদের ভালো নিজেরা বুঝার চেষ্টা করছে না। মারপিটের ঘটনাটি’র বিষয়ে থানায় কোনো মামলা হয়নি।