জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গেছেন তার স্বজনরা।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় মাজেদের স্ত্রী সালেহা বেগমসহ চারজন কারা কর্তৃপক্ষের ডাকে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন। কারা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল সূত্র আজ সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর খুনি আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করতে জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে মো. আবুল, তরিকুল ও সোহেলসহ ১০ জন জল্লাদের একটি দল তৈরি করেছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ। জল্লাদদের দল এরই মধ্যে কারাগারে ফাঁসির ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে। তবে কারা কর্তৃপক্ষের একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন করেও ফাঁসির সময় জানা যায়নি।

কারা সূত্র জানায়, যেকোনো সময় ক্যাপ্টেন মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতে পারে। এর আগে যেসব আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে তা মেনে সব কিছু প্রস্তুত করা হচ্ছে। আজ এরই মধ্যে তার স্বজনদের সাক্ষাৎ করতে ডেকে নিল কারা কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আবদুল মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তার প্রাণভিক্ষার আবেদন বাতিল হয়ে যাওয়ায় ফাঁসির আদেশ কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকল না। এখন পরবর্তী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হবে।

এদিকে আব্দুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করতে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে জল্লাদের একটি দল। যেকোনো সময় কার্যকর হতে পারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড। কাল শনিবার অথবা রবিবার ফাঁসি কার্যকরের সম্ভাবনা বেশি বলে কারা সূত্রে জানা গেছে। 

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত মাজেদ ২৩ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। এরই মধ্যে গত ৬ এপ্রিল মধ্যরাতে রিকশায় ঘোরাঘুরির সময় তাকে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। পরে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে সিটিটিসি। এরপর মাজেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ  দেন আদালত।

এরপর গত ৮ এপ্রিল মৃত্যুর পরোয়ানা পড়ে শোনানোর পর সব  দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান আবদুল মাজেদ। তবে তার প্রাণভিক্ষার আবেদনটি নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি  মো. আবদুল হামিদ।

এদিকে প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি বাতিল করে দেয়ার পর সেই চিঠিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। কারাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম চলবে।