মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ ২৯ মার্চ
মানিকগঞ্জে জ্বর-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হয়ে সুচিত্রা সরকার (২৬) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই নারী হরিরামপুর উপজেলার বলড়া ইউনিয়নের বড়ইছড়া গ্রামের মুদি দোকানদার নিতাই সরকারের স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মুন্নু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিকেল থেকে পুরো বড়ইছড়া গ্রাম লগ ডাউন ঘোষনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিনা ইয়াসমিন এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আইইডিসিআর থেকে ওই নারীর রির্পোট না আসা পর্যন্ত ওই গ্রামটি লগ ডাউন থাকবে। তিনি আরো জানান, লগ ডাউন থাকাকালীন সময়ে ওই গ্রামে বসবাস করা প্রায় ২শত পরিবারকে খাওয়া দাওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহন করা হবে।
এদিকে ওই নারীর দেহে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ বিদ্যমান থাকার আশংকা থাকায় করোনা নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর পাঠিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই হাসপাতালের পরিচালক ডা. মাহবুবুল হাসান জানান, ওই নারীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। নিহত সুচিত্রা সরকার ৭ দিন ধরে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট এবং ২দিন ধরে পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত ছিল।
হাসপাতালের ওই পরিচালক মারা যাওযা সুচিত্রা সরকারের স্বজনদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ৭ দিন আগে ওই নারীর শ্বশুর মারা যান। তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অনেক লোক সমাগম হয়েছিল। সেইখানে আসা কোন ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে তাদের পক্ষ থেকে ওই মৃত নারীর দেহে করোনা ভাইরাসের কোন আলামত আছে কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রোববারই ওই নমুনা জাতীয় রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালটির পরিচালক ডাক্তার মাহবুবুল হাসান জানান, ওই নারীর দেহে করোনা ভাইরাস আছে কিংবা নেই তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষের নমুনা পরীক্ষার পরই জানা যাবে তার দেহে করোনা ভাইরাস ছিলো কিনা !
এব্যাপারে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য এবং তাদের নিকটতম প্রতিবেশীদের প্রথমে কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। একইসাথে হাসপাতালকে বিশেষ নজরদারিতে এবং রোগীর সংস্পর্শে আশা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঝুঁকি এড়াতে ওই গ্রামকে রোববার বিকেল থেকে লকডাউন করা হয়েছে।

বিপ্লব চক্রবর্তী