ওমানে গাড়িচাপায় চারজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। রবিবার আদম এলাকায় কাজ শেষে সাইকেলে চড়ে বাড়ি ফেরার পথে গাড়িচাপায় তারা নিহত হন। গাড়ির চালক ছিলেন ওমানি এক নারী। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে আদম হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সঞ্জরপুর গ্রামের সহিদ আলীর ছেলে সবুর আলী (৩৮) ও হাজিপুরের বিলারপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ মুসলিম আলীর ছেলে মোহাম্মদ লিয়াকত আলী (৩৯) ও কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চিতলীয়া বাজারের টিলালাইন এলাকার আলম আহমেদ (৩৫)।
আজ সোমবার ওমানের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, রাজধানী মাসকাট থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরের একটি মহাসড়ক দিয়ে বাংলাদেশিরা পার হওয়ার সময় একটি বড় গাড়ি তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা যান। পরে দূতাবাসের কর্মকর্তারা স্থানীয় নিজোয়া হাসপাতালে গিয়ে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনকে শনাক্ত করেন। পরিচয়পত্র সঙ্গে না থাকায় নিহত অন্য দুজনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, ওমান প্রবাসী বাংলাদেশিদের মৃত্যুর খবরে তাদের এলাকায় শোকের মাতম চলছে। নিহতদের মরদেহ দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
নিহত লিয়াকত আলীর চাচা বিজিবির (অব.) মাসুদুর রহমান জানান, হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামের মৃত মুসলিম আলীর ছেলে লিয়াকত প্রায় ৫ বছর আগে ওমান যায়। সেখানে কনস্ট্রাকশনের কাজ করে পরিবার চালাতো। পাসপোর্ট নবায়ন করে দু’মাস পরে দেশে আসার কথা ছিল। তার স্ত্রী ও ৭ বছর বয়সের এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহত সবুর আলীর মামাতো ভাই কামাল খান জানান, সঞ্জরপুর গ্রামের আব্দুস শহীদের ছেলে সবুর আলী। সে ১০ বছর ধরে ওমানে। দু’বছর আগে দেশে আসে। কিছুদিন থাকার পর আবার ওমান পাড়ি জমায়। মা আছেন। বাবা নেই। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে সে তৃতীয় তিনি। নিহত সবুরের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শামীম আহমদ জানান, আব্দুল বাছিতের ছেলে আলম আহমদ ৫ মাস আগে ওমান যায়। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
হাজিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু জানান, ঘটনার দিন ওমানে এক মহিলা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। দেশে মরদেহ আনার প্রক্রিয়া চলছে।
নিহত লিয়াকত আলীর শ্যালক জসিম উদ্দীন ওমান থেকে টেলিফোনে জানান, মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই জনের চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। এতে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দুর্ঘটনার কারণ, মরদেহ দেশে পাঠানো প্রক্রিয়া এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস।