পুঁজিবাজার ও সরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারই অংশ হিসেবে ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ (ব্রড মানি) বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২০২০ জুন শেষে ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৩ শতাংশ করা হয়েছে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটারি পলিসি ডিপার্টমেন্ট থেকে এই সিদ্ধান্ত নেয় হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রাও পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতি (২০২০ জুলাই-জুন) ঘোষিত ব্যাংক থেকে সরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটারি পলিসি কমিটি (এমপিসি)-এর ৪৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতে নিট বৈদেশিক সম্পদ বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাংক বহির্ভূত খাত (প্রধানতঃ সঞ্চয়পত্র) থেকে সরকারের ঋণ সংগ্রহের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। তবে বেসরকারি খাতে গৃহীত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ এ খাতে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশই বহাল থাকবে।
সার্বিক অর্থ ও ঋণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নীতি সুদ হারে কোনও পরিবর্তন না এনে সার্বিক সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি ও দেশের পুঁজি বাজারসহ বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এতে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির উপর বিস্তারিত আলোচনার পর চলতি অর্থবছরের মুদ্রা ও ঋণ কর্মসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাণিজ্য ঘাটতি বাড়লেও রেমিট্যান্সের অন্তর্মুখী প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিকভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি মুদ্রানীতিতে প্রক্ষেপিত ৮ দশমিক ২ শতাংশের কাছাকাছিই থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য পণ্যের মূল্যেও কিছুটা বেড়েছে। এর ফলে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং। তারপরেও অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ পরিস্থিতির কাঙ্খিত উন্নতির ফলে অর্থবছর শেষে তা লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছিই থাকবে বলে ধারণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকারের গৃহীত অবকাঠামোগত বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সূত্রে বৈদেশিক ঋণের অন্তঃপ্রবাহ ও সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির সূত্রে আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকায় চলতি অর্থবছর শেষে সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে প্রায় ৪১০ মিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে, মুদ্রা ও ঋণ কর্মসূচিতে ব্যাংকিং খাতে নীট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি করা সমীচীন হবে বলে সভায় মত প্রকাশ করা হয়।