মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ ২১ জানুয়ারি
চার বছর পর বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার হলো মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিমের। ২০ জানুয়ারী আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রত্যাহার পত্রে স্বাক্ষর করেছেন। ফলে গাজী কামরুল হুদা সেলিম এখন থেকে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সকল কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে গাজী কামরুল হুদা সেলিম ২০০৩ সাল থেকে টানা ২০১৪ সাল পর্যন্ত দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ত্রি-বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচনে গাজী কামরুল হুদাকে পরাজিত করে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম। জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে সদস্য পদেও গাজী কামরুল হুদা সেলিমকে রাখা হয়নি। ২০১৫ সালে মানিকগঞ্জ পৌর নির্বাচনে গাজী কামরুল হুদা মেয়র পদে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে জয় লাভ করেন। আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করায় আওয়ামীলীগের গঠতন্ত্রের ৪৭ (ক) ধারা অনুয়ায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ। ওই নোটিশের জবাব দেন গাজী কামরুল হুদা সেলিম।
বহিঃস্কারাদেশ প্রত্যাহারের চিঠিতে উল্লেখ্য করা হয়েছে, গাজী কামরুল হুদা সেলিম দলের বিরোধী কর্মকান্ডের কথা স্বীকার করে আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্রম নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কোন কার্যলাপ করবে না বলে অঙ্গীকার করেছেন। নোটিশের জবাব আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় পর্যালোচনা হওয়ার পর গাজী কামরুল হুদা সেলিমকে দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে ক্ষমা করা হয়।
এদিকে গাজী কামরুল হুদা সেলিমের বহিঃস্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়াতে জেলা আওয়ামীলীগের একাংশের নেতাকর্মীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বইছে। তাদের প্রত্যাশা আগামী জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলের গাজী কামরুল হুদা সেলিম একজন শক্তিশালি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হবেন।
এব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, কে পদ পাবে না, কে পদ পাবেন না সেটা বড় কথা নয় । স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়, সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমসহ আওয়ামীলীগের নীতি আদর্শ যারা বিশ^াস করেন তাদের সকলকে নিয়েই আগামীতে আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করা হবে। গাজী কামরুল হুদা সেলিম একজন দক্ষ সাংগঠনিক তার বহিঃস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়াতে দলের জন্য ভালো খবর। আগামীতে জেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক ভাবে আরো শক্তিশালি হবে।
অপর দিকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম জানান, গাজী কামরুল হুদা সেলিমকে বহিঃস্কার করা হয়েছিল দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ । আবার দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার বহিঃস্কারাদেশ প্রত্যাহার হয়েছে এটাই সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। এটা আমাদের জন্য সুখবর।
বহিঃস্কারাদেশ প্রত্যাহার প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল হুদা সেলিম বলেন, দুর্দিনে দলের জন্য কাজ করেছি। দলীয় নেতাকর্মীরা আমাকে সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছিলেন। পৌর নির্বাচনে জনগনের চাপে প্রার্থী হয়েছিলাম। এতে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় ঘটে। দলের প্রতি আস্থা রেখে বহিঃস্কার হওয়ার পরও কাজ করেগেছি। দলের সিদ্ধান্তে চার বছর পর বহিঃস্কারাদেশ প্রত্যহার হওয়াতে এখন থেকে দলের সকল সাংগঠনিক কাজে অংশ নিতে পারবো। এখন দলকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করতে কাজ করতে কোন বাধা নেই ।
বিপ্লব চক্রবর্তী