মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ ১৫ জানুয়ারী
জীবিত মানুষকে মৃত দেখিয়ে ভূয়া ওয়ারিশান সনদ বানিয়ে জাল দলিলের মাধ্যমে এক সংখ্যালঘুর সম্পতি দখলের অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে সিংগাইর উপজেলা আওয়ামলীগের সহসভাপতি ও সায়েস্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন এবং ইউপি সদস্য ফজলুল হককে।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতাউর রহমান জানান, ২০১৭ সনে জাল জালিয়াতি মামলায় মঙ্গলবার বিকেলে সায়েস্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন এবং ইউপি সদস্য ফজলুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।

মামলার বিবরনে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১১ মে মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩ নং আদালতে মামলা দায়ের করেন অদিতি রায়।ঐ মামলায় আসামী করা হয়েছিল উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সায়েস্তা ইউপি চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন, চেয়ারম্যানের ছেলে তুহিন চোকদার, ইউপি সদস্য মনছের আলী, আব্দুল মান্নান, ফজলুল হক শামীম, ধামরাই সুয়াপুরের আব্দুল খালেক, মোসলেমাবাদের নাজমুল, দক্ষিন চারিগ্রামের দুলাল হোসেন এবং সাহরাইলের গোপাল সাহার বিরুদ্ধে। এছাড়া সিংগাইর উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রার মোস্তাফিজ আহমেদকেও আসামী করা হয়েছিল জাল দলিল সম্পাদন করার অভিযোগে। প্রথমে থানায় এবং পরবর্তীতে মামলাটি হস্তান্তর করা হয় সিআইডিতে। সিআইডি দীর্ঘ দিন মামলাটি তদন্ত করেন মামরার সত্যতা পান ও আসামীদের গ্রেপ্তার করেন।
মামলার বাদীর অভিযোগ তার পিতা অমিত কুমার রায় জীবিত আছেন। সিংগাইরের সায়েস্তা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে তার পিতার নামে ১২ শতাংশ জমি রয়েছে। ঐ জমির মধ্যে ৬ শতাংশ জমি সায়েস্তা ইউনিয়ন পরিষদ দখল করে রেখেছে। বাকী ৬ শতাংশ জমি ১৯৯৮ সনে সমশরে নামে এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দিয়েছেন। জমিটি অধিক মুল্যবান হওয়ায় নজর পড়ে ইউপি চেয়ারম্যানের। চেয়ারম্যান মোসলেম চোকদার তার পিতাকে মৃত দেখিয়ে পিতার নাম অমিত নাথ রায় উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় অজিত নাথ রায় নামে একজনকে তার ভাই বানিয়ে ওয়ারিশান সনদ দেয়। ওয়ারিশনের বলে অজিত নাথকে দাতা সাজিয়ে সিংগাইর সাব রেজিষ্ট্রার অফিসে চেয়ারম্যান তার পুত্র তুহিন এবং ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান, ফজলুল হক উক্ত জমি সাফ কবালা দলিল করে নাম জারি ও জমা ভাগ করে নেন। এরপর তাদের ভাড়াটিয়ে মুদি দোকানদার মো: সমসের আলীকে উচ্ছেদ করে সম্পত্তি জবর দখল করে। অথচ অজিত নাথ রায় বলে তার কোন ভাই কিংবা ওয়ারিশান নেই। এমনকি অজিত নাথ নামে যাকে ভুয়া দাতা বানানো হয়েছে তার ভোটার আইডি কার্ড ছাড়াই সাবরেজিষ্টার তারাহুরো করে তাদের নামে দলিল সম্পাদন করে দেন।

বিপ্লব চক্রবর্তী