আসন্ন দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নীরবে কারচুপি হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।
সোমবার (০৬ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বিএনপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এর আগে বিকাল ৪টায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল। বৈঠক চলে সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত।
তিনি বলেন, ইভিএমে ভোটের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সুতরাং ইভিএম থেকো সরে আসার সুযোগ নেই। ইভিএমে আগে প্রোগ্রামিং করার সুযোগ নেই। ভোটের আগে ভোটের টাইম মেশিনে সেট করে দেয়া হয়। সকাল ৮টার আগে কেউ মেশিন খুলতে পারবে না। আবার ৫টার পরে ভোট দেয়া যাবে না। ইভিএম অনলাইন সিস্টেম না, অফলাইন সিস্টেম। ফলে কোন সমস্যা হবে না।
বিএনপির সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তাদের বুঝিয়ে বলেছি, যার ভোট সে দিতে পারবে। ভোটে কোন অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই। নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের যে অভিযোগ ছিল, ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়া, পুড়িয়ে দেয়াসহ নানা কারণে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ ছিল সেজন্য আমরা ইভিএম ব্যবহার করতে পারি। ইভিএমে ভোটার ডাটাবেজ, বায়োমেট্রিক সম্পন্ন হয়েছে। ফলে আমরা ভোটে অনেক প্রটেকশন নিশ্চিত করতে পারি।
বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএমে নীরবে কারচুপি হওয়ার সুযোগ নেই। সংসদ নির্বাচন, সিটি নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচন করেছি। সেখানে ভোটারদের মধ্যে দ্বিধা দ্বন্দ ছিল না, প্রার্থীদেরও তেমন অভিযোগ ছিল না।
তিনি বলেন, প্রার্থীদের পুলিশি হয়রানি করা, প্রার্থীদের বাসায় হানা দেয়ার যে অভিযোগ পুলিশকে বৈঠক করে কঠোরভাবে বলে দেবো, যাতে প্রার্থীদের হয়রানি না করে। গ্রেফতারি পরোয়ানা বিষয়ে বলেছি নিষ্প্রয়োজনীয় কোন গ্রেফতার করা যাবে না। কিন্তু ক্রিমিনাল অফেন্স করলে গ্রেফতার করা যাবে না, তা হবে না। কোর্ট থেকে অর্ডার আসলে সেটি। প্রয়োজনীয় ও নিষ্প্রয়োজনীয় নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করব। পুলিশের সঙ্গে আনঅফিসিয়ালি কথা বলেছি তারা অপ্রয়োজনীয় গ্রেফতার করবে না পুলিশ। তাদের বলেছি হয়রানিমূলক গ্রেফতার করা যাবে না। নির্বাচনের বিধি মেনেই নির্বাচন পরিচালনা করা হবে। আইন বিধি বিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন করব।
বিভিন্ন স্থানে বিধিমালা ভেঙে প্রচারণার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী আচরণবিধি অমান্য করে প্রচারণার বিষয়ে শুনেছি, তবে কেউ অভিযোগ করেনি। পত্রিকায় যেসব অভিযোগ আসছে, রিটার্নিং কর্মকর্তারা সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ঢাকা উত্তরের বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার ও বিএনপি’র যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার নেতৃত্বে বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও দুই সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আব্দুল বাতেন ও মো. আবুল কাসেম উপস্থিত ছিলেন।